আজ রবিবার, ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ঠাকুরগাঁওয়ে উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে চেয়ারম্যান পদে প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাপ শুরু

ঠাকুরগাঁ প্রতিনিধি: জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতেই স্থানীয় সরকারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা ২১টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। জেলার অন্য উপজেলার তুলনায় রাজনীতিতে এ উপজেলাটি গুরুত্বপূর্ণ।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে মার্চেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। আর এ নির্বাচনকে সামনে রেখে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নানামুখী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। আবার অনেকের পক্ষে তাদের সমর্থকেরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন তৎপরতা চালাচ্ছেন। এ উপজেলায় আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন ৯০ দশকের স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র গণআন্দোলনের তুখোড় ছাত্রনেতা, ঠাকুরগাঁও জেলা ছাত্রলীগ সাবেক সভাপতি, বর্তমান জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক গোলাম ফারুক রুবেল। সদর উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি এবং জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অরুনাংশু দত্ত টিটো। সদর উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মোশারুল ইসলাম সরকার। জেলা আ’লীগের দপ্তর সম্পাদক ও ভুল্লী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ জুলফিকার আলী ভুট্ট্রো, জেলা পরিষদ সদস্য রওশনুল হক তুষার ও বেগুনবাড়ী ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি বনি আমীনের নামও শোনা যাচ্ছে।

অপরদিকে সীদ্ধান্তহীনতায় ভূগছে বিএনপি। এ উপজেলায় জাতীয় পার্টি পক্ষ থেকে মনোনয়ন পেতে জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক রাজেউর রহমান চৌধুরী স্বপনও থেমে নেই। জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নাজমুল হুদা শাহ এ্যাপোলো বলেন গোলাম ফারুক রুবেল একজন সৎ, দক্ষ, স্পষ্টবাদী নেতা। তিনি স্কুল জীবন থেকেই আ’লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। ১৯৮২ সালে সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন, ১৯৮৪ সালে সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, ১৯৮৬-১৯৯১ সাল পর্যন্ত জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, ১৯৮৮ সালে সরকারি কলেজ সংসদে ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে ভি.পি, ১৯৯২ সালে বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক, ১৯৯৫-১৯৯৯ সাল পর্যন্ত পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে জেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৮৬ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে কারাবরণ করেন এই নেতা।

৯০ এর গণ আন্দোলনের সর্বোদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর আবারো কারাবরন করেন তিনি। ১৯৮২ সাল থেকে আ’লীগের প্রত্যেকটি কর্মকান্ড ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সক্রিয় ভুমিকা পালন করেন এই নেতা। ২০০৭ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা কারাবরণ কালে মুক্তির জন্য বিভিন্ন আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহন ও ভুমিকা রাখেন রুবেল। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৯৬ সাল থেকে জেলা মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ডের আহবায়ক, ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির যুগ্ম আহবায়ক, বর্তমান সেক্টর কমান্ডার ফোরামস ও প্রজন্ম ৭১ এর জেলা সাধারণ সম্পাদক, জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কার্যকরী কমিটির সদস্য, লিবার্টি ক্রীড়া ও সাহিত্য সংসদের সভাপতি এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সদস্য এবং গড়েয়া ডিগ্রী কলেজের পরিচালনা পর্যদে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

সালন্দর ইউনিয়ন আ’লীগের মামুন শাহ বলেন তার পিতা মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, গড়েয়া ইউনিয়ন আ’লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, জেলা আ’লীগের অন্যতম সদস্য ছিলেন। মামা মরহুম এ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম (এমপি) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম সহোচর মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, মুক্তিযুদ্ধের ৬(ক) নং সেক্টরের সিভিল অধিনায়ক, কেন্দ্রীয় আ’লীগের সাবেক আন্তর্জাতিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

অপর মামা নুরুল ইসলাম সুজন বর্তমান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ও পঞ্চগড় জেলা আ’লীগের সভাপতি। অপর দিকে ২০১৪ সালের নির্বাচনে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি অরুনাংশু দত্ত টিটোকে অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে বিএনপির প্রার্থী তৈমুর রহমান নির্বাচিত হন । তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন ওই নির্বাচনে আ’লীগের দলীয় অন্তঃকোন্দলের কারনে এ ফলাফল হয়েছে বলে মনে করেন অনেকে। আওয়ামীলীগের এই নেতা মনে করেন যেহেতু গত নির্বাচনে অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরে গেছেন, সে জন্য দলীয় মনোনয়ন তারই প্রাপ্য। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই প্রার্থীর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে অনেকের ধারনা। তবে সদর উপজেলার সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ব্যক্তিগত পরিচয়, দলীয় পরিচয়, বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ ও তৃনমুলে গ্রহণযোগ্যতার ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের মনোনয়ন দিলে এ উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন কার্যক্রম ভাল হবে।

তবে সকল জল্পনা কল্পনা ছাপিয়ে কে কোন দল থেকে মনোনয়ন পান এবং কে সর্বশেষ বিজয়ী হন সেদিকে তাকিয়ে আছে ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ। প্রসঙ্গে গোলাম ফারুক রুবেল বলেন রাজনৈতিক জীবনে সব সময় দলীয় স্বার্থে নেতাকর্মীদের সুখে-দুখে, বিপদে-আপদে মাঠে থেকেছেন। তিনি মনে করেন এ উপজেলায় আ’লীগের মনোনয়ন পেলে বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন বলে জানান এই নেতা। তিনি দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হয়ে গণআন্দোলনের মাধ্যমে সমাজের বিদ্যমান অনাচার-অন্যায়, ঘুষ – দুনীর্তি ও সদর উপজেলাকে মাদক মুক্ত করবেন ।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ